সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত টাকা
অর্থনিতিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মধ্যে অন্যতম একটি প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব। তেল উত্তলন করে এবং রপ্তানি করেই তারা আজ বিশ্বের মধ্যে অর্থনিতিতে এগিয়ে আছে। এছাড়া বিভিন্ন শিল্প কারখানা, পোশাক ও গার্মেন্টস কারখানা, ড্রাভিং, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট এর মাধ্যমেও দেশটির জিডিপি ওআয়ে ভূমিকা আছে। প্রতি বছর সৌদি আরবে বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য নিয়োগ প্রকাশ করে। সেখানে আবেদনের পূর্বে সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত টাকা? কোন কাজের চাহিদা কেমন সেগুলো জেনে নিবেন।
সৌদি আরবে দক্ষ, অভিজ্ঞ ও পারদর্শী কর্মিদের অনেক গুলো কর্মসংস্থান আছে। এজন্য নিজেকে অভিজ্ঞ কর্মি হিসেবে তৈরি করতে হবে। সৌদি আরবে যত অভিজ্ঞতার সাথে ও ভালো ধরনের কাজ করত্রে পারবেন, তত টাকা বেতন পাবেন। বর্তমানে সৌদি আরবের একজন কর্মি মাসে ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা ইনকাম করে। কোন কাজের জন্য কত বেতন পাবেন? কাজের চাহিদা কেমন ও কেমন অভিজ্ঞতা লাগবে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত
এই দেশে যাওয়ার খরচ কম হওয়ায় বাংলাদেশি প্রবাসীরা সৌদি আরবে যেতে আগ্রহী। সৌদি আরবে কাজের জন্য যাওয়ার জন্য অনেক গুলো ভিসা আছে। আপনি কোন ভিসায় কাজ করবেন তার উপরের মাসিক বেতনের পরিমাণ নির্ভর করে। তবে ঐ দেশের কোনো কোম্পানি ভিসায় কাজ করলে সবচেয়ে ভালো হয়। সৌদি আরবের অনেক কোম্পানি ভিসায় সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা বেতন দেয়।
সৌদি আরবে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যাক্তিদের জন্য অনেক ধরনের কোম্পানি আছে। তবে কিছু কোম্পানির ভিসার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে। ঐ ধরনের কোম্পানিতে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয়। নুণ্যতম যোগ্যতা থাকলে একজন প্রবাসী মাসে ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বেতন পাবে। কাজের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে বেতনও বৃদ্ধি পাবে।
কোম্পানির বেতনের স্কেল বা পরিমাণ
- সাধারণ কোম্পানির নুণ্যতম বেতন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।
- কাজে কম দক্ষ কর্মিদের বেতন ৩০ হাজার টাকা।
- একজন অভিজ্ঞ কর্মির বেতন প্রায় ৭০ হাজার টাকা।
শুধু সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা নয়, যেকোনো কাজের ভিসায় অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করেই তাদের বেতন প্রদান করে। এছাড়া সরকারি প্রকল্প ও বেসরকারি প্রকল্প ইত্যাদির উপর নির্ভর করে কোম্পানি ভিসার বেতন দেওয়া হয়।
পোশাক কোম্পানির বেতন কত
সৌদি আরব শুধু পোশাক শিল্পের উর নির্ভর শীল নয়। তবে এই দেশের অনেক শহরেই গার্মেন্টস বা পোশাক কারখানা আছে। যেখানে দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মিদের কে ভিসা দেওয়া হয়, একজন নতুন কর্মি এই কারখানা থেকে মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন পায়। দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে ঐ কর্মি ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বেতন পাবে। পোশাক কোম্পানিতে বেশ কয়েকটি পদে চাকরি করতে পারবেন। এই সকল পদে কর্মরত শ্রমিকদের বেতনের আলাদা আলাদা স্কেল আছে। যা ৩০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।
ড্রাভিং কোম্পানির বেতন কত
সৌদি আরবের কোম্পানির কাজের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ড্রাভিং এর কাজ। সৌদি আরবের অনেক কোম্পানিতে ড্রাভিং এর জন্য অভিজ্ঞ ড্রাইভারের নিয়োগ দেয়। ড্রাভিং লাইসেন্স, ড্রাইভিং দক্ষতা ও সঠিক নিয়ম-কানুন জানা থাকলে খুব সহজে ড্রাভিং কোম্পানিতে জব পাওয়া যায়। বর্তমানে সৌদি আরব এর ড্রাভিং কোম্পানির সর্বনিম্ন বেতন ৪০ হাজার টাকা। সাউ আরবে ড্রাভিং কোম্পানিতে কাজ করে মাসে ৬০ থেকে ৮৭০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যায়। এজন্য দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও ভালো ড্রাভিং জানা থাকা জরুরি।
ফার্মিং কোম্পানির বেতন কত
শুষ্ক আবহাওয়া এবং পানির অভাবের কারণে সৌদি আরবে সীমিত আকারে কৃষিকাজ করা হয়। আর এই কাজের জন্য দক্ষ ফার্মারদের নিয়োগ দেয়। সৌদি আরবে ফার্মিং এর মধ্যে হচ্ছে খেজুর উৎপাদন, গম উৎপাদন, ফল ও সবজি উৎপাদন, পশুপালন ও দুগ্ধ খাত এবং পানি ব্যবস্থাপনা। তবে এই দেশের সকল ফার্মিং কাজ গুলো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে করা হয়। সৌদি আরবে ফারমিং কোম্পানির কাজ করে মাসে ৪০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যাবে। এজন্য বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার ও কৃষিকাজের জন্য নুণ্যতম অভিজ্ঞতা লাগবে।
ইলেকট্রিকাল কোম্পানির বেতন কত
এই দেশে অনেক শহরেই ইলেকট্রিকাল কোম্পানি আছে। এই কোম্পানি গুলোতে কর্মরত ইলেকট্রিশিয়ান গুলো মাসে ৭০ হাজার থেকে ০১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন পায়। এজন্য তাদের অনেক দক্ষতা থাকতে হবে। সাধারণ বা নুণ্যতম দক্ষতা নিয়ে ইলেকট্রিকাল কোম্পানিতে কাজ পাওয়া যায় না। একজন দক্ষ ইলেকট্রিশিয়ান মাসে ১ লাখ টাকার উপরের ইনকাম করতে পারে।
কনস্ট্রাকশন কোম্পানির বেতন কত
সৌদি আরবে বেশির ভাগ শহরের কনস্ট্রাকশন কোম্পানি আছে। যেখানে অনেক কর্মিদের কাজের ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে কনস্ট্রাকশন এর কাজে বিভিন্ন পদে শ্রমিক নেওয়া হয়। যাদের বেতনের পরিমাণ ৪০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা। শুরুতেই উচ্চমানের কনস্ট্রাকশন এর কাজ জানা থাকলে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যাবে।
হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কোম্পানির বেতন কত
সৌদি আরবে টুরিস্টদের জন্য অনেক গুলো স্থান আছে। তাই এখানে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক বেড়াতে আসে। যার ফলে সৌদি আরব এর প্রতি শহরে উন্নতমানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কোম্পানি আছে। যেখানে বিভিন্ন পদে কর্মি নেওয়া হয়। সৌদি আরবের কোম্পানির কাজের মধ্যে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কোম্পানি থেকে ৪০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা বেতন পাওয়া যায়। এই সকল কোম্পানিতে বেতেন বেশি পাওয়ার কারণে হলো বোনাস দেওয়া হয়।
প্রকৌশল কোম্পানির বেতন কত
এই কোম্পানিতে একজন প্রকৌশলী উচ্চমানের বেতন পায়। তবে এই কাজের জন্য উচ্চমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা, সার্টিফিকেট ও কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। সেই সাথে ভিসার দাম ও খরচও অনেক বেশি লাগে। এই ধরনের কোম্পানির কাজ করে একজন প্রকৌশলী মাসে ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা বেতন পায়।
সৌদি আরবের কোন কোম্পানিতে বেশি বেতন পাওয়া যায়?
এটা নির্ভর করে কাজের ধরনের উপর। সাধারণ যে সকল কোম্পানিতে উচ্চ পদে চাকরি রয়েছে যেমন ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিকাল, অটোমোবাইল সার্ভিসিং, প্লাম্বার, প্রকৌশলী, ডাক্তার ও ফ্যাক্টরি। এই সকল কাজে প্রায় ১ লাখ টাকার উপরে বেতন দেওয়া হয়। তবে এই সকল কোম্পানিতে সাধারণ কোনো কর্মি কাজ করতে পারবে না। তাদের ঐ সকল কাজের পূর্বের অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বিভিন্ন ডকুমেন্ট লাগবে। এখানে উল্লেখিত প্রতি কোম্পানিতে প্রায় ২ লাখ টাকার উপরে বেতন পাওয়া যাবে।
সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি
এই দেশের বিভিন্ন লোকের জন্য আলাদা আলাদা কর্মসংস্থান আছে। তাই একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মি যেকোনো কাজ করতে পারে। যাদের কোনো কাজের পূর্বের অভিজ্ঞতা নেই বা কোনো কাজে তেমন দক্ষ নয় শুধু তারাই এই দেশের কাজ পাবে না। বর্তমানে সৌদি আরবের প্রতি কাজের ব্যাপক চাহিদা আছে। তবে এই সকল কাজের জন্য সব সময় ভিসা পাওয়া যাবে।
- ক্লিনানের কাজ।
- সুপার মার্কেট এর কাজ।
- রেস্টুরেন্ট ও হোটেলের কাজ।
- ফ্যাক্টরি ও বিভিন্ন কল কারখানার কাজ।
- রংমিস্ত্রির কাজ।
- কনস্ট্রাকশনের কাজ।
- ড্রাভিং এর কাজ।
- ফার্মিং এর কাজ।
- আইটি কোম্পানির কাজ।
- গ্যাস ফিল্ড এর কাজ।
এছাড়া আরও বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ পাওয়া যাবে। সৌদি আরবে আসার পূর্বে যেকোনো একটি কাজে অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবেন। তাহলে খুব সহজেই যেকোনো ধরনের কাজ পাওয়া সহজ হবে।
সৌদি আরবের সাধারণ মানের যে সকল কোম্পানি আছে সেখানে ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যাবে। তবে উচ্চ মানের কোম্পানির কাজ করে একজন ব্যাক্তি মাসে ১ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা বেতন পায়। কাজের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার মাধ্যমে ভিসা পাবেন। যত ভালো ভিসায় সৌদি আরব আসতে পারবেন তত বেশি বেতন পাবেন।